বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন বিপদজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর্যায়ে রয়েছে বলে মনে করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে শুধু ঢাকা নয় পুরো দেশকেই লকডাউন করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেয়া লকডাউনের কারণে অনেক মানুষেরই যে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়া, সেটার পেছনে মূল কারণ লকডাউনে কর্মহীনতা কিংবা উপার্জন কমে যাওয়া।
আর এই পরিস্থিতি যে শুধুমাত্র দেশের গ্রাম এলাকাগুলোতে দেখা যাচ্ছে এমনটা নয়, বরং শহরগুলোতেও দেখা যাচ্ছে এই একই দৃশ্য। সম্প্রতি বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে লকডাউনে দেশের মানুষের এমনই অর্থাভাবের চিত্র।
এদিকে কথা হয়, মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের সরস্বতী রানীর সাথে। কয়েকবছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর পুত্রের উপার্জনে তার সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু দুই দফা লকডাউনে স্থানীয় একটি সেলুনে কাজ করা ছেলে কর্মহীন হয়ে পড়ায় সংসারে সেই যে বিপর্যয় তা আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি সরস্বতী রানী। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে ছেলে চাকরি হারানোর পর গরীব হয়ে গেছি। ঘরে খাবার থাকেনা। ঋণের টাকা দিতে পারছি না। খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে।’ দুঃখ করে সরস্বতী বলেন, ‘অভাবের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারিনা। দু’মুঠো খেতে বসলে যখনই এগুলো চিন্তা মাথায় আসে, আর খেতে পারিনা।’
এই বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ- এর সিনিয়র রিসার্চার এস এম জুলফিকার আলী বলেন, ‘৬ শতাংশ এই মাত্রা যে আমরা ধরে রাখতে পারিনি এটার প্রধান কারন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নেয়া এই লকডাউন। এখন সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ তারা কিভাবে এটা সামলাবে।’ দারিদ্র্যতা মোকাবেলায় সরকারের চিন্তাধারাগুলো নিয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘সরকার অনেক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। অনলাইনে দরিদ্রদের মাঝে ২৫০০ টাকা পাঠানো, কম মূল্যে চাল দেয়া, কার্ডের মাধ্যমে চাল দেয়া-ইত্যাদি নানা উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এই বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করছি, আমাদের কৌশল কাজ করছে এবং মানুষরা নিজেও এটি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছে। সকলে কাজে ফিরে গেছেন।’
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।